নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :: কক্সবাজারে আজ শুক্রবার আরো দুইজন রোহিঙ্গা করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। তাদের একজন নারী ও একজন পুরুষ রোহিঙ্গা। এ নিয়ে গত দুইদিনে করোনা আক্রান্ত রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ জনে। বৃহস্পতিবার যে দুইজন রোহিঙ্গা আক্রান্তের কথা বলা হয়েছিল তাদের মধ্যে একজন রোহিঙ্গা শিবির সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা। তার নাম অংকি মোহন বড়ুয়া। তিনি বান্দরবান জেলার ঘুংধুম এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় তাকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আইসোলেশন হাসপাতালে ভর্ত্তি করার কথা রয়েছে।
এদিকে উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া শিবিরে বৃহষ্পতিবার একজন রোহিঙ্গা করোনা আক্রান্তের পর আজ শুক্রবার ওই শিবিরটির এক হাজার ২৭৫ পরিবারের ৫ হাজার রোহিঙ্গা বসবাসের বিরাট একটি এলাকা লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। গত দুইদিনে আক্রান্ত মোট ৩ জন রোহিঙ্গাকেই বর্তমানে শিবিরে স্থপিত আইসোলেশন সেন্টারে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রোহিঙ্গা শিবিরে এক সাথে দুই হাজার আক্রান্ত রোগীকে সিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৬০০ জন আক্রান্তের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই দুই হাজার রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু হবে। রোহিঙ্গা শিবিরের স্বাস্থ্য সমন্বয়ক ডা. আবু তোহা ভুঁইয়া কালের কণ্ঠকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে গত দুই দিনে করোনা আক্রান্তের ঘটনায় এলাকাবাসীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ নেই। বৃহস্পতিবারের প্রথম রোহিঙ্গা করোনা পজিটিভের খবর প্রকাশের পর থেকেই কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে করোনা আতঙ্কে চোখের ঘুমও এখন হারাম হয়ে গেছে। এলাকাবাসীর উদ্বেগ কেবল এবার রোহিঙ্গা শিবির থেকেই গ্রামে ছড়িয়ে পড়বে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস।
এলাকাবাসী আরো জানান, মূলত ৮ এপ্রিল থেকে কক্সবাজার জেলার সাথে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা শিবিরও লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই লকডাউন রোহিঙ্গা শিবিরে আদৌ কার্যকর হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি প্রতিদিনকার এনজিওগুলোর গাড়ির বহর কোনদিনই বন্ধ হয়নি।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান জানান, গত দেড় মাস ধরে দিবারাত্রি পরিশ্রম করে রোহিঙ্গাদের যতটুকু নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে সেভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন রোহিঙ্গা এনজিওগুলোকে।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আহমদ বলেন, এনজিও কর্মীরা দেশের নানা এলাকা থেকে রোহিঙ্গা শিবিরে ঢুকে পড়ার কারণেই করোনা ছড়িয়ে পড়ছে। অনুরূপ রোহিঙ্গারাও শিবির থেকে যত্রতত্র বেরিয়ে বিভিন্ন এলাকায় আসা-যাওয়ার মাধ্যমেই করোনাভাইরাস বহন করছে। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, এক কথায় রোহিঙ্গা এবং এনজিওগুলোই করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য দায়ী।
কক্সবাজার সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া জানান, আজ শুক্রবার একদিনেই কক্সবাজার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ২১ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। তন্মধ্যে ২ জন হচ্ছেন রোহিঙ্গা। এ নিয়ে কক্সবাজার জেলার ৮ টি উপজেলায় ৩ জন রোহিঙ্গাসহ ১৫৩ জনকে করোনা পজিটিভ হিসাবে শনাক্ত করা হলো।
পাঠকের মতামত: